প্রধান প্রধান জিজ্ঞাসা
১। প্রশ্নঃ আমার/আমাদের এলাকায়/মৌজায় ভূমি জরিপ শুরু হলে আমার তা কিভাবে জানতে পারবো?
২। প্রশ্নঃ- মৌজায় মাঠ কর্মচারী আসলে আমরা কি করবো?
৩। প্রশ্নঃ- নকশা তৈরীর পর আমাদের করণীয় কি?
৪। প্রশ্নঃ- খতিয়ান প্রস্তুতের পর আমাদের করণীয় কি?
০৫। প্রশ্নঃ মাঠ ও তসদিক খতিয়ানে ভুল থাকলে আমাদের করণীয় কি?
০৬। প্রশ্নঃ- আপত্তি শুনানীকালে আমাদের/ভূমি মালিকগণের করণীয় কি?
৭। প্রশ্নঃ- কেহ যদি মনে করেন ৩০ বিধি আপত্তি স্তরে তিনি ন্যায় বিচার পাননি । তখন তার করণীয় কি?
৮। প্রশ্নঃ আপিল করণীয় কি?
১০। প্রশ্নঃ- কেহ যদি মনে করেন আপিলেও তিনি সঠিক প্রতিকার পাননি সেক্ষেত্রে তার করণীয় কি?
১১। প্রশ্নঃ- আমি জমি খরিদ করেছি, দখল করিতেছি, নামজারী করেছি আমার জমি আমার নামে রেকর্ড হলো না কেন?
১২। প্রশ্নঃ- বিশেষ করে মহিলা ভূমি মালিকগণ বলেন আমি আমার বাবার সন্তান হয়েও জমি রেকর্ড পেলাম না কেন?
১৩। প্রশ্নঃ- কোন কোন ক্ষেত্রে ভাই প্রবাসী বা কোন কারণে না জানার কারণেও প্রশ্ন করেন আমি একই বাবার সন্তান আমার জমি আমার নামে রেকর্ড হলো না কেন?
১৪। প্রশ্ন- আমার প্রয়োজনীয় থাকার পরও আমার জমি আমার নামে কেন রেকর্ড হলো না?
১৫। প্রশ্নঃ- আমার খতিয়ানের ৯ নং কলামে অন্যের নাম লেখা দেখা যাচ্ছে কেন?
১৬। প্রশ্নঃ- আমার খতিয়ান/পর্চা ও নকশার দাগ মিলছে না কেন বা দাগ ভুল কেন?
১৭। প্রশ্নঃ- আমার জরিপ পরিমাণ/এরিয়া কম কেন?
১৮। প্রশ্নঃ- আমি যদি না জানার কারণে জরিপের সকল স্তরে অনুপস্থিত থাকি তাহলে আমার জমি কার নামে রেকর্ড হবে?
১৯। প্রুশ্নঃ- আমি কিভাবে পর্যায়ক্রমে জানতে পারলে আমার জমির রেকর্ড পেতে পারি?
২০। প্রশ্নঃ- চূড়ান্ত প্রকাশিত বা ছাপানো খতিয়ানে/পর্চায় ভুল থাকলে কি করতে হবে?
উত্তরসমূহ
ভূমি জরিপে নকশা ও রেকর্ডে ভুলের কারণে সম্মানিত ভূমি মালিকগণের সম্ভাব্য প্রশ্ন ও প্রশ্নত্তোর পর্বঃ-
১। প্রশ্নঃ আমার/আমাদের এলাকায়/মৌজায় ভূমি জরিপ শুরু হলে আমার তা কিভাবে জানতে পারবো?
উত্তরঃ- ভূমি জরিপ শুরু হলে মৌজায়/এলাকায় পর্যায়ক্রমে ক ও খ ইস্তেহার জারী করা হয়। প্রচুর গণসংযোগ করা হয়। এমনকি মাইকিং করে সম্মানিত ভূমি মালিকগণকে অবহিত করা হয়।
২। প্রশ্নঃ- মৌজায় মাঠ কর্মচারী আসলে আমরা কি করবো?
উত্তরঃ যখন মাঠ কর্মচারীগণ মৌজার নকশা তৈরী শুরু করবে তখন প্রত্যেক ভূমি মালিকের উচিত তাঁর নিজ নিজ জমির আইল সীমানা, বাড়ীর সীমানা সঠিক ভাবে দেখিয়ে দেওয়া যাতে নির্ভুল নকশা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়।
৩। প্রশ্নঃ- নকশা তৈরীর পর আমাদের করণীয় কি?
উত্তরঃ- নকশা তৈরীর পর মাঠ কর্মচারীগণ নকশার প্রতিটি দাগে যাবেন এবং দাগের সঠিক দখল দারের নাম লিখবেন। তখন সঠিক দখলদারে নাম লিখিয়ে দিতে হবে। পরে দখলদারের নামে দখল ভিত্তিক সঠিক বা বৈধ কাগজপত্র যেমন পূর্ববর্তী জরিপের কাগজ বা রেকর্ড বা দলিল বা অন্যান্য কাগজপত্রাদি দেখিয়ে যার যার জমি তার তার নামে রেকর্ড করিয়ে নিতে হবে। এই রেকর্ডের নাম খতিয়ান। প্রতিটি খতিয়ানে সঠিক ভুমি মালিকের নাম থাকবে।
৪। প্রশ্নঃ- খতিয়ান প্রস্তুতের পর আমাদের করণীয় কি?
উত্তরঃ- ডিজিটাল জরিপের ক্ষেত্রে খতিয়ান/পর্চা হল্কা অফিসার/উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার কর্তৃক সকল বৈধ কাগজপত্রাদি দেখিয়ে খতিয়ান তসদিক করিয়ে নিতে হবে।
০৫। প্রশ্নঃ মাঠ ও তসদিক খতিয়ানে ভুল থাকলে আমাদের করণীয় কি?
উত্তরঃ- মাঠ ও তসদিককৃত খতিয়ানে ভুল পরিলক্ষিত হলে তসদিককৃত খতিয়ান তসদিকোত্তর যাঁচের পরে ৩০ কর্মদিবস ডিপি বা খসড়া প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস বা নির্ধারিত অফিসে দেয়া হবে। সেখানে গিয়ে নকশা ও রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখতে হবে নিজের হাতের তসদিককৃত খতিয়ান মূল রেকর্ড বই ও নকশার সাথে মিল আছে কিনা; তা সুন্দর ভাবে বুঝে নিতে হবে। খতিয়ানে মাঠ পর্যায়ের নম্বর পরিবর্তন করে একটি ডিপি নম্বর বসিয়ে নিতে হবে। যাদি কোন ভুল পরিলক্ষিত হয় তবে ডিপি চলাকালীন প্রয়োজনীয় কোর্ট ফি দিয়ে (ডিপি চলাকালীন) ৩০ বিধি আপত্তি দায়ের করতে হবে।
০৬। প্রশ্নঃ- আপত্তি শুনানীকালে আমাদের/ভূমি মালিকগণের করণীয় কি?
উত্তরঃ- সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত নোটিশ জারীকারকের মাধ্যমে ভূমি মালিকগণ পেলে নির্দিষ্ট তারিখে বাদী বিবাদী উভয় পক্ষ তাদের কাগজপত্র আপত্তি অফিসারকে দেখাতে হবে। যদি নকশা সংক্রান্ত ভুল থাকে তবে প্রয়োজনীয় ফ্রি দিয়ে বিধি মোতাবেক বদর আবেদন করতে পারবেন। বদর দাখিল হলে সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার বদর তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করার পর পরবর্তী তারিখে আপত্তি অফিসার রায়ের মাধ্যমে সমাধান দিবেন। যদি বদর প্রয়োজন না হয় তবে আপত্তি অফিসার বাদী/বিবাদীর বক্তব্য ও নকশা পর্চা ও আন্যান্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রায়ের মাধ্যমে আপত্তি নিস্পত্তি করবেন।
৭। প্রশ্নঃ- কেহ যদি মনে করেন ৩০ বিধি আপত্তি স্তরে তিনি ন্যায় বিচার পাননি । তখন তার করণীয় কি?
উত্তরঃ- কেহ যদি ৩০ বিধি আপত্তি স্তরে আপত্তির রায়ের উপর সংক্ষুব্ধ বা খুশি না হন। তখন তিনি ৩০ বিধির আপত্তির নকল তুলে বিধি মোতাবেক ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অফিসে ৩১ বিধি আপিল দায়ের করতে পারবেন।
৮। প্রশ্নঃ আপিল করণীয় কি?
উত্তরঃ সংশ্লিষ্ট আপিল অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত নোটিশ পাওয়ার পর বাদী/প্রতিবাদী পক্ষ ৩১ বিধি আপিল অফিসারকে যার যার কাগজপত্র প্রদর্শন করবেন। যদি নকশা সংশোধনের বিষয় হয় তবে আপত্তির মতো প্রয়োজনীয় ফ্রি দিয়ে বিধি মোতাবেক বদর দাখিল করিবেন। বদর তদন্ত সমপনান্তে প্রতিবেদন দাখিলের পর শুনানীর মাধ্যমে আপিল নিস্পত্তি করা হবে। যদি বদর প্রয়োজন না হয় তবে বাদী/প্রতিবাদীর বক্তব্য ও আনুষঙ্গিক পর্যালোচনা করে আপিল অফিসার আপিল নিস্পত্তি করতে পারবেন বা করবেন।
০৯। প্রশ্নঃ- কেহ যদি ৩০ বিধি আপত্তি দাখিল না করেন তবে কি ৩১ বিধির আপিল দাখিল করতে পারবেন?
উত্তরঃ- না। ৩১ বিধির আপিল হচ্ছে ৩০ বিধির আপত্তির রায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আপিল মামলা। সুতরাং ৩০ বিধি আপত্তি দাখিল না করা হলে ৩১ বিধির আপিল দাখিল করার সুযোগ নেই।
১০। প্রশ্নঃ- কেহ যদি মনে করেন আপিলেও তিনি সঠিক প্রতিকার পাননি সেক্ষেত্রে তার করণীয় কি?
উত্তরঃ- মৌজার খতিয়ান গেজেট হওয়ার পর যদি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের শর্তে পরে তবে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করতে পারবেন। মামলায় প্রতিকার যোগ্য হলে প্রতিকার পাবেন।
১১। প্রশ্নঃ- আমি জমি খরিদ করেছি, দখল করিতেছি, নামজারী করেছি আমার জমি আমার নামে রেকর্ড হলো না কেন?
উত্তরঃ- কোন ভূমি মালিক মাঠ জরিপ হতে ৩০ বিধি আপত্তি স্তর তথা ৩১ বিধি আপিল স্তর পর্যন্ত কোন স্তরেই উপস্থিত না হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে এ ধরণের ভুল রেকর্ড পূর্ববর্তী রেকর্ড মোতাবেক হতে পারে।
১২। প্রশ্নঃ- বিশেষ করে মহিলা ভূমি মালিকগণ বলেন আমি আমার বাবার সন্তান হয়েও জমি রেকর্ড পেলাম না কেন?
উত্তরঃ- আপনার ভাই/ভাইয়েরা যদি তথ্য গোপন করে রেকর্ড করিয়ে থাকেন বা তারা যদি আপনাকে বাদ দিয়ে অন্যের কাজে বিক্রি করে দখল বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন খরিদ্দার/খরিদ্দারগণ দখল ভিত্তিক দলিল পত্র দেখিয়ে রেকর্ড করিয়ে নিয়ে থাকেন তবে এ সবভুল হতে পারে।
১৩। প্রশ্নঃ- কোন কোন ক্ষেত্রে ভাই প্রবাসী বা কোন কারণে না জানার কারণেও প্রশ্ন করেন আমি একই বাবার সন্তান আমার জমি আমার নামে রেকর্ড হলো না কেন?
উত্তরঃ- অন্য ভাই বা বোন যদি তথ্য গোপন করে নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে থাকেন বা বিক্রির কারণে খরিদ্দার/খরিদ্দারগণের নামে দখল ও দলিল মোতাবেক হয়ে থাকে তবে এ ধরণের ভুল হতে পারে।
১৪। প্রশ্ন- আমার প্রয়োজনীয় থাকার পরও আমার জমি আমার নামে কেন রেকর্ড হলো না?
উত্তরঃ- জরিপের সর্বস্তরে নিজে বা কোন প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকার জন্য ।
১৫। প্রশ্নঃ- আমার খতিয়ানের ৯ নং কলামে অন্যের নাম লেখা দেখা যাচ্ছে কেন?
উত্তরঃ- আপানার দখল না থাকার জন্য যার দখল আছে তার নবামে জরিপ বিধি মোতাবেক দখল রেকর্ড দেয়া হয়েছে।
১৬। প্রশ্নঃ- আমার খতিয়ান/পর্চা ও নকশার দাগ মিলছে না কেন বা দাগ ভুল কেন?
উত্তরঃ- মাঠ কর্মচারীকে হয়তো সঠিক ভাবে দাগ দেখাতে পারে নি। এমনকি জরিপের পরবর্তী স্তর গুলোতেও দাগ ভুল সংশোধনের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি তা হতে পারে।
১৭। প্রশ্নঃ- আমার জরিপ পরিমাণ/এরিয়া কম কেন?
উত্তরঃ- আপনার হয়তো দখলে কম জমি আছে। তাই নকশায় কম অংকিত হয়েছে এবং রেকর্ডেও কম হয়েছে।
১৮। প্রশ্নঃ- আমি যদি না জানার কারণে জরিপের সকল স্তরে অনুপস্থিত থাকি তাহলে আমার জমি কার নামে রেকর্ড হবে?
উত্তরঃ- সাধারণত পূর্ববর্তী রেকর্ড মোতাবেক রেকর্ড হবে।
১৯। প্রুশ্নঃ- আমি কিভাবে পর্যায়ক্রমে জানতে পারলে আমার জমির রেকর্ড পেতে পারি?
উত্তরঃ- আপনি যদি মাঠ পর্যায়ে অনুপস্থিত থাকেন তবে তসদিক স্তরে পেতে পারেন। তসদিক স্তরে অনুপস্থিত থাকলে ৩০ বিধ অপত্তি স্তরে পেতে পারেন। যদি ৩০ বিধি আপত্তি দায়ের করেও না পান তবে বিধি মোতাবেক ৩১ বিধি মোতাবেক আপিলে প্রতিকার পেতে পারেন।
২০। প্রশ্নঃ- চূড়ান্ত প্রকাশিত বা ছাপানো খতিয়ানে/পর্চায় ভুল থাকলে কি করতে হবে?
উত্তরঃ- নিজের নিকট গচ্ছিত তসদিককৃত বা যে কোন স্তরের বৈধ খতিয়ান প্রাপ্ত মুদ্রিত খতিয়ানের সাথে গড়মিল হলে সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত প্রকাশনা অফিসারের নিকট বিধি মোতাবেক আবেদন করতে হবে। যদি করণিক ভুল হয় মূল বই ঠিক থাকে তবে মূল বই অনুসারে ৫৩৩/৫৩৪ বিধি মোতাবেক সংশোধন হবে। মূল বইতে যা আছে নিজের পর্চায় বা খতিয়ানের বা আবেদনের চাহিদা মোতাবেক না হলে সংশোধন যোগ্যনয়। নকশায় কোন করণিক ভুল অর্থ্যাৎ নম্বর ভুল থাকলে তা ৫৩৭ বিধি মোতাবেক সংশোধন যোগ্য। আবেদনে অবশ্যই বিধি মোতাবেক ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বা চূড়ান্ত প্রকাশনা চলাকালীন করতে হবে।